খুলনার খবর// খুলনায় পারিবারিক কলহের জেরে মো: মিজানুর রহমান সবুজ জামাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।গতকাল শনিবার রাতে ঘটনার পরপর নিহতের শ্বাশুড়ি ও স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।আজ রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়,জামাই সবুজ ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা করত।গত চার বছর আগে বানিয়াখামার এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সিদ্দিকের মেয়ে রেশমার সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার স্ত্রী রেশমা সবুজের পরিবারের সাথে ভাল আচরণ করত না।
পারিবারিকভাবে আলাদা হওয়ার চেষ্টা সবসময় অব্যাহত ছিল। মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য দু’বছর আগে মিয়াপাড়া পাইপের মোড় নতুন রাস্তা এলাকার আইনজীবী সালামের বাড়িতে ভাড়া নেয়। সেখানে গিয়েও তার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে দেয় স্ত্রী রেশমা।
গতকাল শনিবার দুপুরে সবুজ বাইরে থেকে এসে রেশমার কাছে খাবার চায়। খাবার দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এরপর সে বাইরে গিয়ে দুপুরের খাবার খায়। রাত নয়টার দিকে শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি তাকে বাড়ি আসার জন্য ফোন দেয়। সে রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির গেটের সামনে পৌঁছায়। বাড়ির গেটে পৌঁছামাত্র মীমাংসার কথা বলে ফোন দেয় শ্বশুর সিদ্দিক। এর আগে থেকে শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম, শ্বশুর সিদ্দিক ও শ্যালক সাগর হাওলাদারসহ আরও৮/১০ জন ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। সবুজ বাড়ির গেটের সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে পৌঁছালে অতর্কিত হামলা করা হয় তার ওপর। প্রথমে শ্বাশুড়ি ইট দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করে। এরপর স্ত্রী রেশমা আক্তার মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে। পরে শ্যলক ও তার সহযোগীরা সবুজের ঘাড়ে, বুক, পিঠসহ পায়ের উরুতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। তার শরীরে ৯ টি ক্ষত চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়।
নিহতের মা হোসনে আরা জানান, চার বছর আগে এ এলাকার সিদ্দিকের মেয়ের সাথে তার ছেলে সবুজের বিয়ে হয়। বিয়ের দু’বছর যেতে না যেতে রেশমা পরিবারে অশান্তি শুরু করে দেয়। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে মিয়াপাড়া এলাকার ওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। তারপরও ছেলেকে এভাবে মরতে হল। এ হত্যাকান্ডের ন্যায় বিচার চেয়েছেন তিনি।
খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ আবু হানিফ জানান, রাতে তার লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম ও তার মেয়ে রেশমা আক্তারকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।