ইমরান হোসেন,বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি// দারিদ্রতা আর বাবা অসুস্থ হওয়ায় মিলন শীল কে ১৩ বছর বয়সে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় লেখা পড়া বাদ দিয়ে সংসার এর দায়িত্ব কাধে তুলে নিতে হয়।
দৈনন্দিন সংসার এর খরচ ও বাবার ঔষধের টাকা জোগাড় করতে হয় কিশোর মিলনকে। তার সহপাঠী বন্দুরা যখন লেখাপড়া করে মিলন শীল তখন টাকার নেশায় খুরকাঁচি চালতে থাকেন। জীবিকার তাগিদে জীবন যুদ্ধে মিলন শীল নিজের চেস্টাতে বটিয়াঘাটা উপজেলায় হেঃকোঃ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে এস এসি পাশ করেন ।
২ নং বটিয়াঘাটা ইউনিয়ন এর হেতালবুনিয়া গ্রামের জিতেন্দ্র নাথ শীল ও রাধারনী শীল এর পুত্র । ছোট তিন ভাই বোনের মধ্যে মিলন সবার ছোট।বাঁশের নড়বড়ে খুঁটি পুরান টিনের ঘরে মিলনের সেলুন শত প্রতিকুলতার পরেও মিলনের মনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে বই পড়ার আগ্রহ।একদিন মিলনের পরিচিত এক কাস্টমার ভুল করে একটি উপন্যাস রেখে যান তার সেলুনে মিলন পরম যত্নে বইটি পড়তে থাকেন।শরৎচন্দ্রের মেজ দিদি বইটি পড়ে চোখের কোনে জল জমে যায়, মিলন শীল বইয়ের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। বন্দু পরিচিতি জনদের কাছ থেকে নিয়ে বই পড়তে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, দরিদ্র মানুষ মাঝে মধ্যে নিজে বই কিনে পড়েন এভাবে বই এর সংগ্রহ বাড়তে থাকে তার। বাড়িতে এসে অনেকে বইপড়ে কেউ আবার নিয়ে যায় কাজের জন্য। বাজারে থাকায় সেলুনের ভিতর একটা মিনি লাইব্রেরী তৈরি করে।বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা ৪০০-৫০০ওর বেশি। বটিয়াঘাটা উপজেলায় কোন সরকারি পাঠাগার না থাকায় বর্তমানে সব থেকে বড় লাইব্রেরি এটা।
বটিয়াঘাটার কৃতি সন্তান প্রখ্যাত সাংবাদিক মুক্তিযুদ্ধের গবেষক সাহিত্যিক গৌরাঙ্গ নন্দীর মত ব্যক্তিরাও নিয়মিত পত্রিকা দেন ( সৌজন্য) এই লাইব্রেরিতে ।গৌরঙ্গ নন্দী নিজের লেখা বইও দিয়েছেন মিলনের সেলুন লাইব্রেরীতে। কিশোর কুমার বটিয়াঘাটা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় এর প্রথম বর্ষের ছাত্র বলেন, বই পড়লে সময় কাটে ও জ্ঞান অর্জন হয়, আর এক ছাত্র মেহেদি হাছান রাজ বলেন বই পড়তে ভালো লাগে,স্থানীয় সাংবাদিক ইমরান বলেন, মিলন শীল আমাদের সমাজের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে। নিজের সাধ্যে তিনি একটি মহৎ কাজ করেছে। তার উদ্যোগে আমরা সম্মানিত বোধ করি।
মিলন শীলের পছন্দশীল লেখকদের বই ,
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঞ্চয়িতা,
কাজী নজরুল ইসলামের সঞ্চিতা, শরৎ চন্দ্রের মেজ দিদি,আরো অনেক বই তার সংগ্রহে আছ ।