এস.এম.শামীম দিঘলিয়া খুলনা // দিঘলিয়ায় আতাই নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা। এসব ইট ভাটার নেই কোনো নিজস্ব জমি। নদীর পাড় কেটে জোয়ারের পানির পলি জমিয়ে বছর ধরে ইট কাটে। একদিকে যেমন স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। অপর দিকে নদী ভাঙ্গনকে নিশ্চত ও বেগবান করছে।
খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার ইট ভাটাগুলো যে সময় অভিযান চালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে, সেই সময় দিঘলিয়া তেরোখাদা উপজেলার ইট ভাটার মালিকগণ নড়েচড়ে বসছেন। তেরোখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নিরব।
দিঘলিয়া ও তেরোখাদা উপজেলার ইট ভাটাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দিঘলিয়া ও তেরোখাদা উপজেলার মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত আতাই নদীর তীরে গড়ে তুলেছে ৫টি ইট ভাটা।
এ ভাটাগুলো হলো কেবিসি, বিবিসি, রাজ ব্রিকস, সান ব্রিকস ও কেবিসি। ইট ভাটাগুলোর মধ্যে আতাই নদীর তীরে অবস্থিত খুলনার জনৈক পারভেজের সান ব্রিকস এ বছর থেকে বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে দিঘলিয়া পারে খুলনার মজলিশ খানের কেবিসি ও আতাই নদীর তেরোখাদা পারে মজলিশ খানের কেবিসি, আইচগাতী জুলু চেয়ারম্যান এর রাজ ব্রিকস, দিঘলিয়ার গাজীরহাট ইউনিয়নের মোল্লা জালাল উদ্দিন এর বিবিসি উল্লেখযোগ্য। এ সকল ইট ভাঁটা মালিক আতাই নদীর তীরে ভাঁটা স্থাপন করেছেন। তাঁরা নিজস্ব কোনো জায়গা ব্যবহার না করে এবং অন্যত্র থেকে মাটি ক্রয় না করে আাতাই নদীর পাড় দখলে নিয়ে পাড় কেটে ও গর্ত খনন করে বর্ষা ও বন্যা মৌসুমে নদীর প্রবল জোয়ারকে কাজে লাগিয়ে পলি মাটি আটকিয়ে সেই মাটি ও বালি ব্যবহার করে শুকনা মৌসুমে ইট তৈরি করে চড়া মূল্যে বিক্রি করে অবৈধভাবে মুনাফা লুফে নিচ্ছে।
এ সকল ইট ভাটার কারণে একদিকে যেমন জালানি গাছ ধ্বংস হচ্ছে। অপর দিকে নদী ভাঙ্গনকে তরান্বিত করছে। পরিবেশকে করে তুলছে হুমকি স্বরূপ। দিঘলিয়া ও তেরোখাদা এলাকার নদী পাড়ের রাস্তাগুলো অতিরিক্ত ইট ভর্তি ট্রাক গুলো চলাচল কার কারণে তাদের অস্তিত্ব মানচিত্রেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ইটের ভাঁটা হবে সমতল ভূমিতে। ভাঁটা মালিক মাটি ও বালু কিনে মজুদ করে সেই মাটি ব্যবহার করে ইট তৈরি করবেন। তাঁরা কেন নদীর পাড় অবৈধভাবে ব্যবহার করবে এবং নদীর পলিমাটি ও বালি ব্যবহার করবে? খুলনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে যখন স্থানীয় প্রশাসন তৎপর ভূমিকা পালন করছেন ও ভাঁটা উচ্ছেদে যখন শক্তিশালী ভুমিকা পালন করতে জোর অভিযান পরিচালনা করছেন। সেই সময় তেরোখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকায়। ইট ভাঁটা মালিকগণও যেন নড়েচড়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে বসছেন। এ ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আকরাম হোসেন এর সাথে।
তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, এ সকল ইট ভাটার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে কথা হয় দিঘলিয়া উপজেলার একজন সাংবাদিক এস এম শামীমের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমার কাছে এলাকার অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ করেছে এ সকল ইট ভাঁটা মালিকদের বিরুদ্ধে। এদের কারণে নদী ভাঙ্গন হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দিঘলিয়ার নদী পাড়ের মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ এলাকার হাজার হাজার মিটার জনপথ। স্থানীয় প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকায়। আমি সম্প্রতি এ ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ঘটনাটা জানিয়েছি।
Leave a Reply