1. info@www.khulnarkhobor.com : khulnarkhobor :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি/বিজ্ঞাপন
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com    বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৪৭,আপার যশোর রোড (সঙ্গীতা হোটেল ভবন) নীচতলা,খুলনা-৯১০০।ফোন:০১৭১০-২৪০৭৮৫,০১৭২১-৪২৮১৩৫। মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
খুলনার খবর
পাইকগাছায় প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত কেশবপুরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত শার্শায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার বেনাপোলে সময় টিভির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত তেরখাদায় বাংলা নববর্ষ ও ঈদ পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী পাইকগাছার কপিলমুনিতে বাসন্তী পূজা উপলক্ষে ঢালী খেলা ও যাদু প্রদর্শনী বটিয়াঘাটা উপজেলায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় লবন পানি বন্ধের দাবীতে পথসভা ও লিফলেট বিতরন কেশবপুর থানা পুলিশের আয়োজনে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত ঝিকরগাছায় শব্দদূষণ বন্ধে অবস্থান কর্মসূচি ও ইউএনও’র নিকট স্মারকলিপি প্রদান অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেবে সরকার মাসজুড়েই দেশব্যাপী তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে নড়াইলে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলার উদ্বোধন মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়- সালাম মূশের্দী এমপি পাইকগাছায় নছিমন চালকের সততায় ৭০ হাজার টাকা ফেরৎ পেল প্রকৃত মালিক শার্শায় সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিকসহ আহত ২ মোংলায় বানীশান্তা যৌনপল্লীতে ‘জীবনখেয়া’ র বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদাণ মোংলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে হাবিবুন নাহার এমপি

২০ মে চুকনগর গণহত্যা দিবস

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২
  • ৪১৯ বার শেয়ার হয়েছে

সরদার বাদশা,নিজস্ব প্রতিনিধি // ২০ মে ঐতিহাসিক চুকনগর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে বর্বর পাকবাহিনী ও তার দোসররা যে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চালায় তা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্ববৃহৎ নজির হয়ে রয়েছে। আজ পৃথিবীর ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের দিন। দেশকে স্বাধীন করার জন্য এত স্বল্প সময়ে, একই দিনে, একই স্থানে, একই সময়ে এত লোক হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হয়নি বিশ্বের কোথাও।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে বর্বর পাকবাহিনী ও তার দোসররা বাঙ্গালী জাতির উপর নির্বিচারে ঝাঁপিয়ে পড়ে সারাদেশে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। তাদের এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মানুষ জীবন বাঁচানোর তাগিদে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রায় ২ মাস পাকবাহিনীর অত্যাচার সহ্য করে অবশেষে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বৃহত্তর খুলনার বাগেরহাট, রামপাল, মোড়লগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, মংলা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, চালনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েক লক্ষ মানুষ ভারতে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে রওনা হয়ে ১৯ মে রাতের মধ্যে সবাই চুকনগরে এসে পৌঁছায়। খুলনা জেলা সদর থেকে ৩০ কি.মি. দূরে অবস্থিত চুকনগর শহর। এজন্য বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিশ্রাম ও আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় চুকনগর শহরকে । ওই দিন রাতে কয়েক হাজার মানুষ চুকনগরের পাতোখোলা বিল, শহরের ভিতর, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে সমবেত হয়। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সবারই মনে চাপা ক্ষোভ। জন্মভূমি ছেড়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে সবাইকে চলে যেতে হচ্ছে ভারতে।

এই অবস্থায় আশ্রয় গ্রহণকারীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে কখন না জানি পাকবাহিনী তাদের ওপর হামলা করে। এ আশংকায় পরের দিনই চুকনগর শহর ত্যাগ করা সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কেউ কেউ সকালের দিকে যাত্রা করে। অন্যরা সকালের খাওয়া দাওয়া শেষে রওনা হবে। এজন্যে সকালে সবাই রান্না-বান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারও রান্না শেষ হয়েছে। কেউবা শুরু করেছে। কেউবা ভাতের থালা নিয়ে বসে খেতে পড়েছে। ঠিক এমনই মুহুর্তে পাকবাহিনীর ১টি ট্রাক ও ১টি জীপ চুকনগরÑসাতক্ষীরা মহাসড়ক ধরে মালতিয়া মোড়ের ঝাউতলা নামক স্থানে এসে হঠাৎ থেমে যায়। এ সময় রাস্তার পাশে পাট ক্ষেতে কাজ করছিল চিকন আলী মোড়ল (৭০) নামে এক বৃদ্ধ। গাড়ীর শব্দে সে উঠে দাঁড়ালে পাকবাহিনী তাকেই প্রথমে গুলি করে হত্যা করে। শুরু হয় পাকবাহিনীর তান্ডবলীলা। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। বেলা প্রায় ১১টা হবে। এরপর পাকবাহিনী চলে আসে চুকনগর শহরে। শুরু হয় গুলি আর গুলি। গুলির শব্দে আর এখানে জড়ো হওয়া নারীÑপুরুষের আর্ত-চিৎকারে আকাশ, বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। চারিদিকে শুধু কান্নার শব্দ। হুড়োহুড়ি আর দৌঁড়াড়েড়ি। এরপর সবকিছুই এক সময় নীরব হয়ে যায়। চারিদিকে শুধু লাশ আর লাশ । পাকিস্থানী নরপশুরা সেদিন চুকনগর শহর, মন্দিরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢুকে নিরীহ মানুষকে অকাতরে গুলি করে হত্যা করেছে। কোথাও লুকিয়ে ওদের হাত থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। চুকনগর সেদিন মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছিল। পাকিস্থানীদের এই তান্ডবলীলা প্রায় ২/৩ ঘণ্টা ধরে চলে। এই স্বল্প সময়ে বর্বর এই বাহিনী চুকনগরে যেন মানুষ মারার হোলিখেলায় মেতে উঠেছিল। সেদিন মানুষের আর্তচিৎকার ও দৌঁড়াদৌঁড়িতে পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে কত অবুঝ শিশু মারা গিয়েছিল তার কোন ইয়ত্তা নেই। কত শিশুকে তার মা ফেলে পালিয়েছিল। কিন্তু তারা কেউ বাঁচতে পারেনি। কত শিশু মৃত মায়ের বুকের উপর স্তন পান করেছে। সে জানে না তার মা এ পৃথিবীতে নেই। আবার দেখা গেছে অসহায় মায়ের কোলে শিশুর লাশ। মাকে হারিয়ে কত শিশু অসহায়ের মত বসে কাঁদতে দেখা যায়। সেদিন এমনই দৃশ্য ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
পাকিস্থানীদের তান্ডবে চুকনগরের সবুজ মাটি মুহূর্তের মধ্যে লাল হয়ে উঠেছিল। চুকনগরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ভদ্রা নদীতে ছিল লাশের বহর। ছিল তাজা রক্তের স্রোত। কোথাও পা দেওয়ার জায়গা ছিলনা। চুকনগর শহরের ওলিতে গলিতে গাছে,নদীতে,ঘরের চালে,খালে বিলে শুধু লাশ আর লাশ। পাকবাহিনীর বর্বর পৈচাশিক হত্যাযজ্ঞের পর চুকনগর শহর শকুন ও কুকুরের দখলে চলে যায় সেদিন। অনেক মৃত প্রায় ব্যক্তিকে নিয়ে টানাটানি করেছিল শকুন আর কুকুর। এই করুণ দৃশ্য কখনও ভুলবার নয়। শত শত বছর ধরে এই হত্যাকান্ডের তথ্য মানুষ স্মৃতিতে রাখবে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ। সেদিন চুকনগরে কত মানুষ মারা গেছে তার কোন সঠিক হিসাব ছিল না। তবে তখনকার লাশ বহনকারী ২২ জন শ্রমজীবীর অন্যতম সদস্য আব্দুল জব্বার ও শের আলী সরদার সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন আমরা ৪৪শ’ পর্যন্ত গণনা করার পর আর ঠিক করতে পারিনি। তবে ১০/১৫ হাজারের মত নিরীহ মানুষ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাক হানাদার বাহিনী। এত অল্প সময়ে এক জায়গাতেই এত লোককে হত্যা করা হয়েছে তার কোন নজির আজও কোথাও বিশ্বের কোন স্থানে পাওয়া যায়নি। চুকনগরের এ নৃশংস ঘৃন্যতম দৃশ্য পৃথিবীর ইতিহাসে সব গণহত্যার চেয়ে বর্বর বলে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম দিন। এ দিনটি শুধু চুকনগরের জন্য নয়। বাংলাদেশের জন্য একটি ভয়াল ও স্মৃতিবাহী দিন। স্বাধীনতা যুদ্ধের একটি অবিস্মরণীয় দিন। বেদনা বিধূর ও শোকাবহ দিন।

কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য চুকনগর গণহত্যার ঘটনাটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সঠিক স্থানতো দূরের কথা নামটি পর্যন্ত ও স্থান পায়নি। পৃথিবীর এজঘন্যতম ঘটনাটি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শুধু চুকনগরেই সীমাবদ্ধ ছিল। এটি ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য উদ্যোগ নেন গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ও চুকনগর কলেজের অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম। এরপর চুকনগরের এই জঘন্যতম হত্যাকান্ডটি ইতিহাসের পাতায় তুলে ধরার জন্য তিনি তৎপরতা শুরু করেন।সেই থেকে প্রতি বছর দিনটিকে যথাযথ মর্যাদায় পালন করা হয়।
তবে এ বছর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লেওকাত আলী লাকীর নেতৃত্বে চুকনগর বধ্যভূমিতে শহীদদের স্মরণে দেশ বরেন্য আর্ট শিল্পীদের নিয়ে আর্টক্যাম্প,স্থানীয় ও জাতীয় শিল্পীদের নিয়ে কয়েকটি নাটক সহ ১০/১২টি অনুষ্ঠান করেছে। তাছাড়া তিনি ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছেন ২০১৭সালের মধ্যে বধ্যভূমিতে প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয়, জাদুঘর,বিনোদন কেন্দ্র ও লাইব্রেরী তৈরি করা হবে।

শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:-  ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।