শরিফুল ইসলাম,খুলনা // খুলনার বিভিন্ন এলাকার কামারদের ঈদুল আজহাকে ঘিরে বেড়েছে কাজের ব্যস্ততা। কোরবানির পশু জবাই ও গোশত কাটার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত কামার শিল্পীরা।কামার শিল্পীদের দম ফেলার যেন ফুরসত আর নেই।
কাক ডাকা ভোর হতে গভীর রাত পর্যন্ত খুলনার বিভিন্ন উপজেলাতে কামার দোকান গুলোতে লোহার সাথে হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠছে। ঈদ আসতে এখন রয়েছে হাতেগোনা কয়েকদিন আর ঈদের দিন চাহিদামত কসাই না পাওয়ায় দেশের সিংহভাগ পশু কোরবানিদাতা নিজেরাই নিজেদের পশু কোরবানির কাজটি করেন। তাই তাদের এ কাজের অন্যতম অনুষঙ্গ ধারালো ছুরি, বটি ও দা।
সারাবছর খবর না থাকলেও প্রতিবছর ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এসব ধাতবযন্ত্রের জন্য যেতে হয় কামার বাড়ি বা দোকানে। আবার অনেকে এসব সরঞ্জামে শান দিতেও ভিড় করছেন কামার দোকানে।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে রয়েছে ৩০ থেকে ৪৫ কামারের দোকান। কিন্তু ঈদকে সামনে রেখে ২০/২৫ দিন আগে থেকেই মৌসুমী বিভিন্ন ব্যবসায়ীরাও এলাকার মোড়ে মোড়ে পসরা সাজিয়ে বসেন। কোরবানির পশু কেনার পাশাপাশি সবাই এসব সরঞ্জাম চাপাতি, দা, বটি ও ছুরি কেনায় চাহিদা বেড়ে গেছে।পাশাপাশি যেখানে যেদিন হাট বসছে ঠিক তার পাশেই এসব ধাতব সরঞ্জাম বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।
চাহিদামত মানসম্পন্ন ধাতব সরঞ্জামের নিয়মিত যোগান দিতে এখন রাত দিন সমান তালে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।পাইকগাছার কপিলমুনিতে পংকজ কর্মকার,পঞ্চানন কর্মকার এর দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে তাদের হামার ও হাতুড়ি যেন থামছেই না। বাজারের আশপাশের লোকদের ভোর হচ্ছে কামারদের দক্ষ হাতের হামার-হাতুড়ির টুংটাং শব্দে যা চলে গভীর রাত অবদি।
তারা জানান,ব্যস্ততার ভিড়ে দোকানেই তাদের দিনরাত অতিবাহিত হচ্ছে। শেষ সময়ের ব্যস্ততায় নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের বছরের অন্যান্য সময় তেমন কাজ না থাকায় ঈদুল আজহাকেই টার্গেট করে তারা ব্যবসা করেন।
কামার পট্টির দোকানদার জানান,সাধারণত স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা ব্যবহার করে চাপাতি, দা, বটি ও ছুরি তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরি উপকরণ গুলোর দাম তুলনামূলক ভাবে কম। এছাড়াও লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহার ১৫ ইঞ্চি লম্বার একটি ছুরি ১২শ থেকে ১৫শ টাকা, নরমাল ৭শ থেকে ৮শ টাকা, ছোট পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১০০ থেকে ২০০, দা পতি কেজি ৬শ থেকে ৮শ টাকা দরে, বঁটি দেড়শ থেকে ৪শ, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে শুরু, চাপাতি ৮শ থেকে হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে কামারদের দোকানে কোন মূল্য তালিকা না থাকায় যে যার মত কাজের মুজুরি নিচ্ছে। প্রতিটি দোকানে নির্দ্দিষ্ট মূল্য তালিকা টাননোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতা সাধারন।
Leave a Reply