মোঃ আলমগীর হোসেন,লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি // নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মো: তফিকুল আলমকে (৫২) মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বেধড়ক মারপিট করে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সচিব বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন।
এজাহার সুত্রে জানা গেছে, লোহাগড়া পৌর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী শেখ স্যাইয়াদুল হক (৪০) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি করে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। তাহার অনিয়ম দুর্নীতিতে বাদসাধে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) তফিকুল আলম। এহেন ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই বাকবিতন্ডা হতো বলে জানান পৌর কর্মচারীরা। প্রকৌশলী স্যাইয়াদুল হকের খারাপ আচারন ও সাধারন কর্মচারীদের গালমন্দ করায় ক্ষুব্ধ ও অতিষ্ঠ ছিল পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে প্রকৌশলী স্যাইয়াদুল হক নির্বাহী কর্মকর্তা তফিকুল আলমের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে নাম ধরে ডাকতে থাকে এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এ সময় উভয়ের মধ্যে বেশ বাকবিতন্ডা হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) তফিকুল আলমকে বেধড়ক মারপিট করে হাড়ভাঙ্গা জখম করে স্যাইয়াদুল তার কক্ষ ত্যাগ করেন। সচিবের আত্মচিৎকারে পৌর কার্যালয়ে থাকা সহকর্মীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রান্ত সরকার জানান, লোহাগড়া পৌর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তফিকুল আলমকে তার সহকর্মীরা হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। তার মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা ছিল। পরিক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখা যায় তার ডান হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী ক্ষোভ ও দু:খ প্রকাশ করে বলেন, তাদের ভাগ্যই খারাপ। আগে যে প্রকৌশলী দায়ীত্বে ছিলেন তিনি ছিল মাদকাসক্ত। বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। বর্তমান স্যারও একই রকম। অফিস কক্ষে বসে সেবা প্রত্যাশীদের সামনেই ধুমপানসহ অনেক অপরাধ মুলক কাজ করেন।তবে পৌর ইন্জিঃ তার বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। লোহাগড়া পৌর মেয়র আলহাজ্ব সৈয়দ মশিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় তফিকুল আলম বাদী হয়ে লোহাগড়া পৌর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী শেখ স্যাইয়াদুল হককে আসামী করে মঙ্গলবার ১৯ জুলাই বিকালে লোহাগড়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু হেনা মিলন এজাহার প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
Leave a Reply