মোঃ আলমগীর হোসেন,লোহাগড়া (নড়াইল) সংবাদদাতা // দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতি নদীর ওপর কালনা পয়েন্টে নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেনের দৃষ্টিনন্দন‘মধুমতি সেতু’র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার দুপুরে গনভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ সেতুর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর পর জনসাধারনসহ সেতুতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল শুরু করেছে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সেতুর কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন। ২০১৮ সেপ্টেম্বরে মধুমতি সেতুর কাজ শুরু হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যান যা ধনুকের মতো বাঁকা। ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রæতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব ড.আহম্মদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় নড়াইলের লোহাগড়ায় সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খন্দকার মুহিত উদ্দিন,নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি, নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তুজা, নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান,পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন, প্রকল্পের পরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য, সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান,নড়াইল জেলা আওয়ামীরীগের সভাপতি এ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস, সহ-সভাপতি এ্যাড সৈয়দ আইয়ুব আলী, সাধার সম্পাদক নিজামউদ্দিন খান নিলু, লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আজগর আলী,লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুন্সি আলাউদ্দিন, সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ূর রহমান প্রমুখ।
এ সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা।বহুল কাঙ্খিত মধুমতি সেতু নির্মানের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার কালনা পয়েন্টে মধুমতি সেতুর ফলে কর্মসংস্থান বাড়াবে, অবহেলিত এলাকে উন্নতি করবে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে মধুমতি সেতুর গুরুত্বপূর্ণ। বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে যশোর হয়ে নড়াইলের মধুমতি সেতু হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল,খুলনা, নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব কমবে। এশিয়ান হাইওয়েতে থাকা এই সেতুটি সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, বেনাপোল, কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকাও রাখবে।
মধুমতি সেতুর টোল নির্ধারণ
মধুমতি সেতু পারাপারের জন্য বড় ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০ টাকা, দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মাঝারি ট্রাক ২২৫, ছোট ট্রাক ১৭০ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহ্নত পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশনকৃত জিপ ও রে-কার ৯০ টাকা, প্রাইভেট কার ৫৫ টাকা, অটোটেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিকশা, ভ্যান ও বাইসাইকেলের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা টোল নির্ধারণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।