খুলনার খবর // সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়। সেখান থেকে বিপদের মুখে পড়েন একটি মেয়ে (১৯)। আবার ফেসবুকে সক্রিয় একটি গ্রুপই মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। মেয়েটির বাড়ি গাজীপুর জেলায়। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁর বাবা (৬৫) গাজীপুর চৌরাস্তায় ছোটখাটো ব্যবসা করেন।
মেয়েটির বাবা জানান, গত ১৬ জানুয়ারি থেকে মেয়ের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁরা খবর নিয়ে জানতে পারেন, যে দোকানে মেয়েটি কাজ করতেন সেখানেও যাচ্ছিলেন না। পরে সম্ভাব্য নানা জায়গায় খুঁজে না পেয়ে ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। সেখানেই ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েকে খুলনায় উদ্ধারের ছবি ও সংবাদ পান।
মেয়েটিকে উদ্ধারকারী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপটি হচ্ছে উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব)। এই গ্রুপের অ্যাডমিন পুলিশ কনস্টেবল মো. আলী আকবর। তিনি খুলনা জেলা পুলিশের এএসপি-এ সার্কেলে কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উদ্ধারকারী পুলিশ কনস্টেবল আকবর আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রূপসা এলাকায় তিনি মেয়েটিকে যখন দেখেন, তাঁকে পাগলির মতো দেখা যাচ্ছিল। কিছু জানতে চাইলেও সঠিকভাবে জবাব দিচ্ছিলেন না। শুধু মুখে ‘ইমু, ইমু’ বলছিলেন। তাঁর হাতে একটি কাগজ ছিল। তাতে ইমুর মুঠোফোন নম্বর ছিল। মেয়েটি মাঝেমধ্যে ডুকরে কাঁদছিলেন। ইমু বলে চিৎকার করছিলেন। পরে জানা যায়, মেয়েটি ইমু নামের এক ছেলের বন্ধুত্বের ওপর নির্ভর করেই খুলনা শহরে এসেছিলেন। কিন্তু ছেলেটির সন্ধান পাননি। তার পর থেকেই তিনি প্রায় অপ্রকৃতিস্থ হয়ে খুলনা মহানগরীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
মেয়েটিকে উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ নিয়ে একাধিক ছবিসহ পোস্ট করা হয় উই আর বাংলাদেশ ফেসবুক গ্রুপে। সেই পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করে অসংখ্য মানুষ। এক পর্যায়ে মেয়েটির মা-বাবা তাঁর সন্ধান পান। তাঁরা গাজীপুর থেকে খুলনায় এসে গতকাল শুক্রবার মেয়েকে নিয়ে যান।
মেয়েটির ব্যাপারে কথা হয় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি একটি মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’ কয়েক দিন বিশ্রামে থাকলে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা যায়,মেয়েটি যার ওপর নির্ভর করেছিলেন, তাঁর নাম ইমু। তিনি খুলনার আযমখান কমার্স কলেজে পড়েন এবং ফেসবুক পেজ পেট বিড়ালের মাধ্যমে অনলাইনে বিড়াল বিক্রি করেন। ইমুর সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ইমু তাঁকে খুলনায় আসতে প্ররোচিত করেন। এবার মেয়েটি ১৬ জানুয়ারি বাসা থেকে খুলনার উদ্দেশে বের হন। ১৯ জানুয়ারি তাঁকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হয়।
ইমুর পুরো নাম শেখ ইমু। তাঁর বাড়ি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়ায়। পড়াশোনার জন্য ইমু খুলনা মহানগরীর দিলখোলা রোডে থাকেন। ইমু ও তাঁর বন্ধু শাহরিয়ার এই অনলাইন ব্যবসা চালান।
যোগাযোগ করা হলে শেখ ইমু জানান,গত সাত মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েটির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তাঁদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটি আগেও খুলনায় এসেছেন। কিন্তু মেয়েটির আগে বিয়ে হয়েছে জানতে পেরে তিনি সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করেন। এবার মেয়েটি যে খুলনায় এসেছিলেন, তা তিনি জানতেন না বলে দাবি করেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।