শাহাবুদ্দিন মোড়ল,ঝিকরগাছা,যশোর || নামের মিল থাকায় ঝিকরগাছা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে আরেকজন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী কারীর বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধ না করেও শুধুমাত্র নিজের নামের সাথে মিল থাকা এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ জাল করে এই অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করছেন তিনি। অভিযুক্ত ওয়াজেদ আলীর বাড়ি ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের হরিদ্রাপোতা গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত সামছুল হক।
তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী খাঁর বাড়ি একই ইউনিয়নের কুমরী গ্রামে। তিনি মৃত বাবু খাঁ এর ছেলে।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৫ সালের ১৪ মে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যে সরকারি তালিকা প্রকাশ করা হয় তাতে লাল মুক্তিবার্তা নং ০৪০৫০৬০৩০৮, বেসামরিক গেজেট নং ১৬৭৩, ক্রমিক নং ৩১৯, পৃষ্ঠা নং ৩৩৪৯ এ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্ত ছিলেন শংকরপুর ইউনিয়নের কুমরী গ্রামের মৃত বাবু খাঁ এর ছেলে ওয়াজেদ আলী খাঁ।
পরবর্তীতে ৮ জুলাই ২০১৪ সালের সংশোধিত তালিকায় ৩১৮ নং ক্রমিকে ১৬১৬১ পৃষ্ঠার ১৬৭৩ নং বেসামরিক গেজেটে দেখা যায় সেখানে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নাম আছে মোঃ ওয়াজেদ আলী, পিতা মৃত সামছুল হক, গ্রাম হরিদ্রাপোতা। সেখানে লাল মুক্তিবার্তার নং মৃত ওয়াজেদ আলী খাঁ এর নংই ব্যবহ্রত হয়েছে। এবং বেসরকারি গেজেট নংও একই।
মৃত ওয়াজেদ আলী খাঁ এর কোনো ওয়ারেশ না থাকায় তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে অনৈতিক ভাবে ওয়াজেদ আলী এই কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন ঝিকরগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী। এর পূর্বে ১৯৯৮ সালের ৩০ডিসেম্বর ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা দাবীদার ব্যক্তির নামের তালিকার ৫৫৯০৩ নং ক্রমিকের মোঃ ওয়াজেদ আলীর আবেদন খারিজ করে দেন তৎকালীন ঝিকরগাছা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছাত্তার।
বর্তমানে সুযোগ সুবিধা ভোগকারী ওয়াজেদ আলী বলেন, প্রথম গেজেটে কম্পিউটার করার সময় সব তথ্য ভুল ছিল। ওয়াজেদ আলী খাঁ বলে কোনো লোকের অস্তিত্ব নেই। পরে ২০১৪ সালে আমি সব ঠিক করে নিয়ে এসেছি।
ভাতা প্রদানকারী ঝিকরগাছা সোনালী ব্যাংক ঝিকরগাছা শাখার ব্যবস্থাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি ইউ এন ও মহোদয় কে জানিয়েছি। তিনি আদেশ দিলে এই ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ঘটনাটি মৌখিক ভাবে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ভাতা উত্তোলন সাময়িক বন্ধ করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
উল্লেখ্য ইতিপূর্বেও ঝিকরগাছায় মশিয়র নামে একজন মৃত মুক্তিযোদ্ধার সনদ জালিয়াতি করে কুলিয়ার মোরশেদের ছেলে কথিত ডাঃ বিল্লাল তার মৃত পিতার নাম টেম্পারিং করে সরকারি ভাতা এবং সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।