যশোর প্রতিনিধি || যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ধোপাদী গ্রামের মাছের ঘের থেকে উদ্ধার হওয়া অটোরিকশা চালক রাশেদের মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় নিহত রাশেদের ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাও উদ্ধার করা হয়।
গতকাল রোববার চার আসামির মধ্যে স্বামী-স্ত্রী আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ হত্যার প্রধান আসামি বাঘারপাড়া উপজেলার বারভাগ গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দীন মোল্লার ছেলে মেহেদী হাসান মিলনকে মুড়লী মোড় থেকে ও তার স্ত্রী ঝিকরগাছার পারবাজার গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে জান্নাত আক্তার আয়েশাকে ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর থেকে আটক করে পিবিআই। একই দিন জড়িত আরেক আসামি অভয়নগর উপজেলার কোটা গ্রামের কলিম বিশ্বাসের ছেলে রিমন বিশ্বাস বাবুকে বসুন্দিয়া মোড় থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
এছাড়াও গতকাল রোববার সকালে যশোর সদর উপজেলার সাড়াপোল এলাকা থেকে অপর আসামি মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার একিন মোল্লার ছেলে বেল্লাল হোসেনকে রাশেদের অটোরিকশাসহ আটক করে র্যাব-৬ যশোরের সদস্যরা।
পিবিআই ও র্যাব জানায়, আসামিরা আন্তঃজেলা চোর ও ছিনতাইচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় কাজের লোক ও ফেরিওয়ালা বেশে বাড়িতে ঢুকে অচেতনের পর লুট করে। অনেকসময় অচেতন করে নারীদের ধর্ষণও করে তারা।একইভাবে রাশেদের অটোরিকশা ছিনতাই করতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।
গ্রেফতাররা জানায়, মেহেদী তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার আয়েশাকে নিয়ে রাশেদের অটোরিকশা ভাড়া করে। তারা প্রথমে রাজগঞ্জ ঝাঁপা বাওড় এলাকায় বেড়াতে যায়। ঝাঁপা বাওড়া থাকা ভাসমান ব্রিজে তারা কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে। একপর্যায়ে রাশেদের অটোরিকশা নিয়ে অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী মশরহাটিগামী ইটের রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে যান তারা।
মেহেদী অটোরিকশা থামিয়ে নিজের পরনে থাকা রাবারের বেল্ট খুলে রাশেদের গলায় ফাঁস দিয়ে জোরে টেনে ধরে। আয়েশা রাশেদের দুই পা চেপে ধরে। রাশেদের মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে মরদেহ ঘেরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। অটোরিকশাটি রাজারহাট এলাকায় এনে মেহেদীর এক বন্ধুর কাছে বিক্রি করে দেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই যশোরের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ডিএম নূর জামাল হোসেন বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে আয়েশাকে আটক করা হয়। এরপর আয়েশা একেক সময় একেক রকম তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করতে থাকেন। পরে তার স্বামীকেও আটক করা হয়। আটকের পর তারা হত্যার ঘটনাটি স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য,গত ২ মার্চ সকালে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর জসিম উদ্দিনের ছেলে রাশেদ উদ্দিন অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন সকালে অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী এলাকার একটি মাছের ঘের থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রাশেদের বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।