তারিকুজ্জামান রুবেল,প্রতাপনগর প্রতিনিধি || প্রতাপনগর কুড়িকাহুনিয়ায় কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধের ভাঙন রোধে বালু ভর্তি ডাম্পিংয়ের জিও বস্তা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়। গতকাল বেলা ৫ টায় কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ টার্মিনাল ঘাট বেড়িবাঁধে ইউপি সদস্য শহিদুল্লাহ সানা ও গ্রামবাসীদের আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব,প্রাকৃতিক দুর্যোগ,জোয়ার ভাটার স্রোত ধারার ভাঙ্গন, নদীর তুফানের আঘাত আঘাতে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার বেড়িবাঁধ। সাম্প্রতিক সময়ে কুড়িকাহুনিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙ্গন রোধে প্রায় ৬০ হাজার জিও বস্তা ডাম্পিংয়ের বরাদ্দ দেয় সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে প্রায় ৩৫ হাজার বস্তা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের দাবি তোলেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
ঠিকাদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অসমাপ্ত বালু ভর্তি জিও বস্তা ডাম্পিংয়ের কাজ সম্পন্ন করার দাবি তোলেন মানববন্ধনে বক্তারা। নির্দিষ্ট স্থানে বালু ভর্তি বস্তা ডাম্পিং না করে শ্রমিকরা বস্তা কেটে নদীতে বালু ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে কাজের এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদারদের সমন্বয়ে সৃষ্ট সিন্ডিকেট স্থানীয়দের উপর চড়াও হয়ে উঠেন তারা। এ সিন্ডিকেটের কারণেই উপকূলের বেড়িবাঁধের দুরাবস্থা।
মানববন্ধনে ইউপি সদস্য শহিদুল্লাহ সানা বলেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর পোল্ডার নং ৭/২ এর অধীন কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চঘাট এলাকায় নদী ভাঙন রোধে সর্বশেষ বরাদ্দকৃত ৭টি প্যাকেজে প্রায় ৬০ হাজার জিও বস্তা ডাম্পিংয়ের কথা থাকলেও এ পর্যন্ত প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার বস্তা ডাম্পিং করা হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বাকি প্রায় ৩৫ হাজার বস্তা কোথায়? স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে পাউবো ও ঠিকাদারের কাছে কাজের ওয়ার্ক আউট ও কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হয়। সামান্য নিম্নচাপের সৃষ্টি হলেই ভঙ্গুর বেড়িবাধ ভেঙে যাওয়া ও ওভার-ফ্লো হয়ে লবন পানিতে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মানববন্ধনে আকরাম হোসন সানা বলেন, ডাম্পিং কাজের ফিল্ড তদারককারী আছাদ ও কামরুজ্জামান (টুকু) এর শ্রমিকরা বালুভর্তি জিও বস্তা ডাম্পিং না করে বস্তা কেটে বালু নদীতে ফেলে বস্তা গায়েব করে ফেলেছে।
উল্লেখ্য গত ১৯ এপ্রিল তারিখে প্রায় ৫০ টি বালু ভর্তি জিও বস্তা কাটা অবস্থায় শ্রমিকদেরকে হাতে নাতে ধরা হয়।
এঘটনার পর কোম্পানির লোকেরা কাজের যাবতীয় সরঞ্চাম গুটিয়ে কাজ হবে না ঘোষণা দিয়ে কাজের ফিল্ড থেকে চলে যায়। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জয়নুল আবেদীনের উপস্থাপনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাসান উল্লাহ, প্রমুখ।
মানববন্ধনে স্থানীয় আবু আব্দুল্লাহ বলেন পাউবোর কর্মকর্তা এস.ও আলমগীর কবিরের মাধ্যমে ৭টি প্যাকেজের কাজ শুরুর দিকে বালু ভর্তি বস্তা সেলাই করার পর ডাম্পিংয়ের জন্য লেবার সরদার ও স্থানীয়দের হিসেবে ৪৬৭০ টি বস্তা গণনা করা হয়। অথচ এস.ও আলমগীর কবির একই বস্তা গণনা করে ৫৩০২ টি লিপিবদ্ধ করে। গণনার এমন তারতম্যের বিষেয়ে জানতে চাইলে এস.ও আলমগীর কবির বলেন, আমরা কৈফিয়ত দিতে আসিনি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলা দিয়ে জেলে ভরে দিব।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।