পরেশ দেবনাথ,কেশবপুর,যশোর || যশোরের কেশবপুরে গ্রীষ্মের রসালো ফল কাঁঠাল এখন বাজারে সয়লাব। দাম কমলেও ক্রতাদের কেনার আগ্রহ যেন কম। ফল বিক্রেতা বাউশলা গ্রামের আতাুর রহমান জানান, বর্ষা-বাদল কম সেকারণে ক্রেতাদের চাহিদাও কম। পাঁজিয়ার সমাজ কল্যান সংস্থার বাবুরালী গোলদার জানান, এবার পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁঠালের ফলন হয়েছে, তাছাড়া বর্ষা নাই ফলে ক্রেতারও অভাব। আর বর্ষা না হলে মানুষ কাঁঠাল খায় কম। মজিদপুর গ্রামের নারায়ণ সরকার (৮০) প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল কেশবপুর বাজারের উপজেলা রোডে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। খরিদ্দাররা ক্রয় করার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। সর্বোচ্চ দাম হয়েছে ২৫০ টাকা। তিনি ৫০০ টাকা দাম চেয়েছেন। তিনি জানান, গত বছর এই গাছে ৪০/৪৫ টি কাঁঠাল হয়েছিল কিন্তু এবার এ গাছে দুইটি কাঁঠাল হয়েছে। গাছের বয়সে কোন সময় এত বড় কাঁঠাল হয়নি।
অন্যদিকে কেশবপুরের ভোগতি-বায়শা গ্রামের এরফান আলী (৬০) তার ২৬ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল নিয়ে এসেছেন। কাঁঠালটি ৩০০ টাকা দাম হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, গত বছর এ ধরনের কাঁঠাল ৫/৬ শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। পর্যাপ্ত ধরণ ও বর্ষা না হওয়া হলো দাম কমার কারণ।
কাঁঠাল এর বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus (ইংরেজি নাম: Jackfruit) (জ্যাক গাছ নামেও পরিচিত)। সব বয়সী নারী-পুরুষের জন্য এই ফল খুব উপকারী। সুস্থ থাকতে যে কেউ প্রতিদিন কাঁঠাল খেতে পারে। বিভিন্ন পুষ্টিবিদগণ কাঁঠালের পুষ্টিগুণের কথা লিখেছেন।
কাঁঠাল পুষ্টি সমৃদ্ধ।এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম,আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান।অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ,শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ নিতান্ত কম।কাঁঠাল গাছ গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নভূমিতে ভাল উপযোগী এবং বিশ্বের ক্রান্তীয় অঞ্চলে ব্যাপকভাবে চাষ হয়। এটি সমস্ত গাছের ফলের মধ্যে বৃহত্তম ফল এবং ছোট থেকে ওজনে ৪০ কেজির উর্ধেও দেখা যায়।
এটি এক প্রকারের হলুদ রঙের সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল হিসাবে সরকারীভাবে নির্ধারিত। বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁঠাল গাছ পরিদৃষ্ট হয়। কাঁচা কাঁঠালকে বলা হয় এঁচোড় যা বাঙালি সমাজে গাছপাঁঠা নামেও সমধিক পরিচিত। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরীর জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণীর পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কাণ্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া / কোষ। কাঁঠালের বৃহদাকার বীজ কোয়ার অভ্যন্তরভাগে অবস্থিত। কেশবপুসহ বিভিন্ন বাজারে এবছর কাঁঠালে সয়লাব এবং দাম কম।