পরেশ দেবনাথ, কেশবপুর, যশোর ||কেশবপুরে ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে নিজের জমির ধান কেটে-ঝেড়ে তাক লাগিয়ে দিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এম,এ রহমান। তিনি জানান, “বর্তমান সময়ে কৃষানের দাম অনেক বেশি তারপরও পাওয়া যাচ্ছে না, সেই কারণে নিজের ক্ষেতের ধান নিজেই কর্তন করেছি।
আমি মনে করি কাজ কোনটাই ছোট নয়।” তিনি আরও বলেন, এই দুর্মূল্যের সময় শ্রমিকের ভরসায় বাড়িতে বসে না থেকে ঝড়-বর্ষার হাত থেকে রক্ষা পেতে মাঠে আপনার নিজের জমির ধান নিজে কেটে বাড়ি নিয়ে সংরক্ষণ করুন এবং সকলকে জানিয়ে দেন, ‘কাজ কোনটাই ছোট নয়’। দুঃখের বিষয় আমি বোঝা বইতে পারিনা, জন দিয়ে বয়ে নিয়েছি। দেড় বিঘা জমিতে ধানের ফলন পেয়েছি পারকাটা প্রায় দুই মন। সকলে তাকে প্রশংসা করেছেন।
বৈশাখের প্রচণ্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরম উপেক্ষা করে যশোরের কেশবপুরে বোরোধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। একমন ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের মূল্য হচ্ছে না। একমন চিকন ধানের মূল্য ১২শ টাকা আর একজন শ্রমিকের মজুরি ১৪শ থেকে ১৫ টাকা। ধানের বাম্পার ফলন ও ন্যায্য মূল্য পেলেও শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষক।
এবছর বোরো ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত না হলেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এবছর বোরোধান চাষে সার কীটনাশক তুলনামূলক কম লাগলেও অনুকূল আবহাওয়ার মাঝে মধ্যে আকাশের বৃষ্টি হচ্ছে। কৃষক স্বল্পমূল্যে বোরো ধানের আবাদ করে খুব খুশি হয়েছে।
উৎপাদন খরচ কম, ধানের বাম্পার ফলন, নতুন ধানের ন্যায্য মূল্যও পাচ্ছে কৃষক। উপজেলায় ধানকাটা শ্রমিকের চাহিদা বেশি হওয়ায় খুলনা জেলার কয়রা পাইকগাছা, কপিলমুনি, সাতক্ষীরা জেলার তালা কলারোয়া উপজেলার ধানকাটা শ্রমিকরা কেশবপুর আসছেন।
সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ভালুকঘর গ্রামের কৃষক হায়দার আলী বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শ্রমিকের মজুরি ১ হাজার টাকা, বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫/৬শ টাকা।
উপজেলা জাহানপুর গ্রামের কৃষক বিশিষ্ট দলিল লেখক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, একমন ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের দাম হচ্ছে না। একমন (৪০ কেজি) ধানের মূল্য বর্তমান বাজার দর ১২শ টাকা থেকে ১৩৫০ টাকা। আর একজন শ্রমিকের মূল্য সকাল থেকে দুপুর একটা পযন্ত ১৪শ থেকে ১৬০০ টাকা।
কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে অনেক কৃষকের ধান, যারা আগেভাগে লাগিয়েছিল তারা ধান কেটে পরিস্কার করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে আগামী ৮/১০ দিনের ভিতরে সকল কৃষকের ধান বাড়িতে এসে যাবে বলে অধিকাংশ কৃষক মনে করছেন।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস বলেন, এবছর ঝড়বৃষ্টির পরিমাণ বেশি দেখা যাচ্ছে। ৮০/৮৫ ভাগ ধান পেকে গেছে, এখন কৃষকদের ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শুধু শ্রমিকের ভরসার সময় নষ্ট না করে নিজের কাজ নিজে করারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।