মোঃ আলমগীর হোসেন, নড়াইল প্রতিনিধি ||নড়াইলের লোহাগড়া পৌর শহরে কোনো নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে বাজারসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় যত্রতত্র ময়লা ফেলে গড়ে উঠেছে ভাগাড়। এ অবস্থায় চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ী, পথচারী, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সাধারণ জনগণ।
বাজারের কেন্দ্রস্থল, লোহাগড়া প্রেসক্লাব মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, মুরগি ও মাংস পট্টি, লক্ষীপাশা খাদ্য গুদামের সামনে প্রতিদিনই জমছে ময়লার স্তূপ। এসব স্থানে কয়েক গজ দূরেই রয়েছে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারণে সেখানে আসা রোগী ও স্বজনদের অবস্থা হয় শ্বাসরুদ্ধকর।
রোববার (২২ জুন) সরেজমিনে লোহাগড়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডজুড়েই দেখা মিলছে একই চিত্র। রাস্তাঘাটের পাশেই রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। দুর্গন্ধে চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব এলাকায় জমে জলকাদা, সৃষ্টি হয় কাদা-পানির স্রোত। ফলে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতেও চরম দুর্ভোগ তৈরি হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পৌর কর্তৃপক্ষ বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। তাদের দাবি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা ও লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহাদুজ্জামান বাটু বলেন, “আপনারা এক দিন এখানে থাকলে বুঝতেন আমরা কী যন্ত্রণায় আছি। হেঁটে গেলে বমি আসে, পেটে ভাত যায় না। শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে, বৃদ্ধরা শ্বাস নিতে পারে না। মনে হয় এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে!”
পৌর শহরের বাসিন্দা ও লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, প্রতিটি পৌর শহরে ডাম্পিং ব্যবস্থা থাকার কথা রয়েছে। পৌরসভার বয়সকাল ২০ বছর হলেও নির্দিষ্ট ডাম্পিং ব্যবস্থা না থাকায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা স্তুপ ফেলানো হচ্ছে। এতে করে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে শহরের মানুষ। তিনি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যেন দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হয়।
পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারজানা সুলতানা মিতা নামে অপর এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “এটা এক দিনের সমস্যা নয়। বছরের পর বছর ধরে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে ভাগাড় তৈরি হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নেয় না। কেউ শোনেও না। কী ভয়ংকর গন্ধ, বলে বোঝানো যাবে না।”
লোহাগড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিঃ বাপ্পি বলেন, “বাজারের ভেতরে যেভাবে ময়লা জমছে, এতে ব্যবসা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত ডাম্পিং স্টেশন না হলে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।”
লোহাগড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও পৌর বিএনপির সাধারণ সাধারণ সম্পাদক শেখ মশিয়ার রহমান সান্টু বলেন “শুধু পরিবেশ নয়, এসব ময়লা থেকে মশা-মাছি বাড়ছে, ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি। পৌর কর্তৃপক্ষ সময় মতো ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা আছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ বলেন, “ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের একটি প্রকল্প হাতে রয়েছে। তবে উপযুক্ত জায়গা না পাওয়ায় এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। পৌরসভায় জমি খুঁজছি, আশাকরি দ্রুত সমাধান হবে।”
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।