রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ,খুলনার খবর || কয়েক বছরের ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে রিতু ও সাজ্জাদের। বিষয়টি জানার পর দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় দু’জনের।
কিন্তু সেই ভালোবাসায় ছেদ ফেললো যৌতুক নামের অভিশাপ। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য রিতুর উপর চাপ দিতে থাকে স্বামী, শাশুড়ি আর দুই ননদ। যৌতুক দিতে না পারায় বিভিন্ন সময় শারীরিক নির্যাতন চলতো রিতুর উপর। এরই মধ্যে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পরে রিতু।
কিন্তু তাতেও মন গলেনি পাষন্ড স্বামী, শাশুড়ি আর দুই ননদের। তাদের অমানিবক নির্যাতনে ৮ মাসের গর্ভের সন্তানকে নিয়ে না ফেরার দেশে এখন রিতু।
আজ বুধবার (০২ জুলাই) সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আর এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রামে। আর ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে।
কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত গৃহবধূ রিতু খানম মুকসুদপুর উপজেলার পালপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ রবিউল ইসলামের মেয়ে ও কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রামের সাজ্জাদ খানের স্ত্রী।
রিতুর বাবা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, কয়ের বছর ধরে আমার মেয়ে রিতুর সাথে কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা গ্রামের টেপু খানের ছেলে সাজ্জাদ খানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। আমরা বিষয়টি মেনে নিয়ে দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে দু’জনের বিয়ে দেই।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামী, শাশুড়ী ও দুই ননদের শারীরিক নির্যাতন নেমে আসে রিতুর উপর। এরই মধ্যে অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়ে রিতু।
তিনি আরো বলেন, ৮ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হলেও তাতে মন গলেনি শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের। সোমবার সন্ধ্যায় যৌতুকের দাবীতে আমার মেয়ে রিতুর উপর শাররিক নির্যাতন চালায় শাশুড়ী, স্বামী ও দুই ননদ।
পরে সেখান থেকে পালিয়ে বাড়ীর পাশের এক প্রতিবেশির ঘরে আশ্রয় নেয়। এসময় আমাদের খবর দিলে আমরা গিয়ে রিতুকে উদ্ধার করে প্রথমে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি।
সেখানে রিতুর অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার বিকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার সকালে গর্ভের বাচ্চাসহ মারা যায় রিতু।
তিনি আরো বলেন, যারা নির্যাতন চালিয়ে আমার মেয়ে ও গর্ভের বাচ্চাকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই। এ ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, তবে এখন পযর্ন্ত থানায় কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।