খুলনার খবর ||খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা-২ আসনের ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী শফিকুল আলম তুহিন বলেছেন, চব্বিশের গণঅভ্যূত্থান এদেশ থেকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে।
সেই সঙ্গে উন্মোচন করেছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এই সম্ভাবনা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-শিল্প-সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার এখনই সময়। পুরো জাতিকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে হলে আমাদের ভেঙে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে আগে ঠিক করতে হবে।
সেক্ষেত্রে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেখা পথে তারেক রহমান অনুসৃত ৩১ দফাই হতে পারে মূল নিয়ামক। আগামীতে দেশ গঠনের সুযোগ পেলে শিক্ষাখাতে সেই পথেই হাঁটবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের দেশনেতা।
শিক্ষার্থীরা যেন নৈতিকতা, দেশপ্রেম এবং মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে গড়ে উঠতে পারে, সে লক্ষ্যে আমরা সবসময় শিক্ষাবান্ধব ও উৎসাহমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আমরা বিশ্ব দরবারসহ সর্ব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই।
আর এ জয় আসবে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। তরুণরা তাদের মেধা, সততা, পরিশ্রম দিয়ে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এজন্য প্রত্যেক তরুণকেই ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হতে হবে। ভালো মানুষ হলে, তাদের মাধ্যমে আমাদের পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সব ক্ষেত্রে জয়ী হবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে মহানগরীর বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি ছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শুধু ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়, ভালো মানুষেরও খুব বেশি প্রয়োজন। সফল মানুষের প্রয়োজন।
এ দেশকে স্বাধীন করতে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধারা রক্ত দিয়েছিলেন। ২৪ এ স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করতে ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছেন। এখন দেশ গড়তে সততার সাথে আমাদের মেধা ও উন্নত চিন্তাটুকু দিতে হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, বৈষম্য করেছে এবং মেধাকে গুরুত্ব দেয়নি।
তুহিন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর প্রথমেই দেশের শিক্ষাখাতে নজর দেন। কেননা তিনি জানতেন, ব্রিটিশ কলোনিয়াল ব্যবস্থায় এদেশের মানুষ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
পাকিস্তানী শাসনামলেও এদেশের মানুষের শিক্ষার পরিবেশ সেভাবে সম্প্রসারিত হয়নি। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের সময়ও শিক্ষাখাতকে একটি সুস্পষ্ট গাইড লাইন দেওয়া যায়নি। ফলে তার প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায় এদেশের শিক্ষাখাতের উন্নয়ন।
কেননা তিনি জানতেন, মানুষের জ্ঞান ও চিত্তের উৎকর্ষের জন্য, মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশের জন্য, চরিত্র গঠন ও মানবীয় মূল্যবোধের জন্য, সর্বোপরি মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য শিক্ষা হচ্ছে প্রধান নিয়ামক। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষ তার রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশ লাভ করে। ১৯৭৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর শহীদ জিয়া ঢাকায় একটি “জাতীয় শিক্ষা কর্মশালা” আয়োজন করেন।
এতে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে জড়িত সারাদেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষাকর্মী এবং শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। শহীদ জিয়ার মত শিক্ষাখাতে অবিস্মরণীয় কর্মযজ্ঞ শুরু করেন তাঁর সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আসে। দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিশেষ নজর দেওয়া হয় নারী শিক্ষাখাতে। নারীদের শিক্ষা গ্রহণে এবং পরিবারগুলোকে তাদের মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর জন্য আগ্রহী করতে ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয় এবং ছাত্রীদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা নিশ্চিত করা হয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছেন। সে ৩১ দফায় শিক্ষা ব্যবস্থা কীভাবে হবে, শিক্ষার মান কীভাবে উন্নয়ন করা হবে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষিত জাতি গড়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি হচ্ছে শিক্ষা বান্ধব দল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, খালেদা জিয়াও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
আজকের অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা খালেদা জিয়াই চালু করেছেন। মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়ার মূল কারণ হচ্ছে খালেদা জিয়া। তাই বিএনপি শিক্ষার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
তুহিন বলেন, ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদে নির্বাচনের ব্যবস্থা, যোগ্য, দক্ষ ও মানবিক জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫% অর্থ বরাদ্দ করা। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে ক্রমান্বয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো জনস্বার্থ সংশ্লিষ্টখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষা প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট সকল খাতকে ঢেলে সাজানোর কথা বলা হয়েছে ৩১ দফায়।
হাজী ফয়েজ উদ্দিন বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে মাইলস্টোন স্কুলে নিহত কোমলমতি শিশু ও বিমান পাইলটের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।বক্তব্য রাখেন সাজ্জাদ আহসান পরাগ, শওকত আলী লাবু বিশ্বাস, প্রধান শিক্ষক অনুপ কুমার বৈরাগী, সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইয়াসমিন প্রমূখ।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।