মোঃ রাজু হাওলাদার, খুলনা || খুলনার বাজারগুলোয় সরকারি চাল বিক্রি দেখা যাছে। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও কোন অভিযান বা ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। বাজার কমিটি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই এই ব্যবসা করছে চাল ব্যবসায়ীরা বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি খুলনার দৌলতপুর বাজারে বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি চাল মজুদের বিষয়টি জানাজানি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতপুর তুলাপট্টির পাশে মেসার্স কাদের ট্রেডার্সে সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৪ হাজার বস্তা সরকারি চাল মজুদ রয়েছে। এইসব চাল সরকারি বস্তা থেকে খুলে নুরজাহানসহ বিভিন্ন নামের বস্তায় প্যাকিটিং করছে। পাশ^বর্তী শাহাবুদ্দিনের চাল গোডাউনে মজুদ করা হয়েছে ঢাকা থেকে আনা রেশনের কয়েকটন চাল। এছাড়া মানিকতলা এলাকার সিফাত এন্টারপ্রাইজেও হাজার হাজার বস্তা সরকারি চাল মজুদ রয়েছে। সংবাদ না করার জন্য এইসময় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনার সিএসডি গোডাউন থেকে সরকারি বরাদ্দ করা ৩৭০ মেট্রিকটন চাল নীলফামারির শামসুল হক অটো রাইস মিল কর্তৃপক্ষ বুঝে নেন। এরপর তারা খুলনার দৌলতপুরের কাদের টেডার্সকে ১৯০ মেট্রিকটন এবং সিফাত এন্টারপ্রাইজকে ১৮০ মেট্রিকটন চাল দেয়। এই ঘটনার পর কাদের টেডার্সের মালিক তার শ্রমিকদের নিয়ে সরকারি সাদা বস্তা থেকে চাল বের করে বিভিন্ন নামের ২৫ কেজি বস্তায় সেগুলো প্যাকিটিং করেন। পাশ^বর্তী চাল ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিনও সরকারি রেশনের চাল ঢাকা থেকে কিনে তার গোডাউনে মজুদ করে একই ভাবে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার পথে হাঁটছেন।
এই বিষয়ে কাদের টেডার্সের মালিক বলেন, নীলফামারির প্রতিষ্ঠানকে এই চাল ভিন্ন বস্তায় তারা সরবরাহ করবে। পাশাপাশি মরা ও নষ্ট চাল তারা বাছাই করবে। এই ধরণের চুক্তির বিনিময়ে তার গোডাউনে চাল মজুদ করা হয়েছে। তারা এই সরকারি চাল বিক্রি করে না। নীলফামারির প্রতিষ্ঠান কি করবে সেটা তারা জানে না। তারাও আরও বলেন, সকল ধরণের বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে আছে।
এদিকে অপর চাল ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি ঢাকা থেকে রেশনের চাল কিনে এনেছেন। তার কাছে সকল কাগজপত্র আছে। তবে সরকারি চাল এভাবে কিনে ভিন্ন নামে বস্তায় বিক্রি করা অপরাধ কিনা জানতে চাইলে তিনি পরে দেখা করতে বলেন।
এই বিষয়ে দৌলতপুর বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নান্নু মোড়ল বলেন, আমরা শুনেছি বিষয়টি। আমরা চাল ব্যবসায়ীদের ডেকে বিষয়টি খেঁাজ নিব। কোন অন্যায় হলে অবশ্যই যথাপযোগী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ সাইফুজ্জামান বলেন, অনেক সময় রেশনের চাল সেনা, নৌ ও পুলিশ সদস্যরা বিক্রি করে দেন। যথাযথ কাগজ সংরক্ষনের মাধ্যমে সেই চাল সেভাবেই বাইরে বিক্রি করার নিয়ম। সরকারি বস্তা খুলে অন্য কোন ব্রান্ডে বিক্রি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ—পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম জানান, সরকারি চাল মজুদ করে সেই চাল ভিন্ন বস্তায় প্যাকেটিং করাটা অবৈধ। এমন কোন অভিযোগ থাকলে অবশ্যই আমরা অভিযান করে ব্যবস্থা নিব।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।