মোঃ জসিম উদ্দিন তুহিন, যশোর প্রতিনিধি||যশোরে এক ব্যক্তির দেহে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের আশঙ্কায় অনুসন্ধান করতে যশোরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আইইডিসিআর একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
ছয় সদস্যের এই টিম আক্রান্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তির রক্ত ও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ করবে।
এর আগে গত মার্চ মাসে যশোর সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ২ হাজার ৭৮টি মুরগি নিধন করে পুঁতে ফেলা হয়। যদিও প্রাণিসম্পদ ও স্বাস্থ্য বিভাগ এটিকে নিয়ন্ত্রণে থাকা ‘লো প্যাথোজেনিক’ ভাইরাস বলে জানিয়ে জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেয়।স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের রামনগর এলাকার একজন ব্যক্তির দেহে বার্ড ফ্লুর কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
উপসর্গগুলো সন্দেহজনক হওয়ায় আইইডিসিআর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত টিম পাঠিয়েছে। প্রতিনিধিরা যশোরে কয়েকদিন অবস্থান করে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করবেন।যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান আইইডিসিআরের একটি ছয় সদস্যের টিম যশোরে এসে নমুনা সংগ্রহ করে নিশ্চিত করবে আদৌ এটি বার্ড ফ্লু কিনা।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ সরকারি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হওয়ার পর পরদিনই ওই খামারের ছয়টি শেডের সব মুরগি মেরে ফেলা হয় এবং খামার জীবাণুমুক্ত করা হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান জানান, এই ভাইরাসের প্রকোপ সীমিত এবং তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
পোলট্রি খামারগুলোকে সতর্ক করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে এবং দেশে পর্যাপ্ত বিশেষায়িত ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছিল। এ বছর পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পোলট্রি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৯৫ হাজার খামার থাকলেও নানা অর্থনৈতিক সংকটে প্রায় ৬২ হাজার খামার ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ ঘটলে সেটি পোলট্রি শিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্য সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণে গুরুত্বারোপ করেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক বলেন, মানবদেহে সংক্রমণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তবে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। মার্চ মাসের সংক্রমণ ছিল সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত।
এরপর থেকে কোনো নতুন খামারে এমন কিছু পাওয়া যায়নি। হাঁস-মুরগি ও ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রেও ভয় না পেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জনগণকে বার্ড ফ্লু নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।