খুলনার খবর ||খুলনার বাগমারা এলাকায় সংঘর্ষ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে নিরীহ পরিবারের সদস্যদের হয়রানি বন্ধ ও প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গুলিবিদ্ধ আবদুল আজিজের পরিবার।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আজিজের পরিবারের সদস্য হাসি আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, গত ৪ মে খুলনা সদর থানার বাগমারা এলাকায় একটি চুরির ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আবদুল আজিজ গুলিবিদ্ধ হন এবং আরও পাঁচজন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।
ঘটনার পর ৫ মে, আবদুল আজিজের পিতা খলিল শেখ বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন।
তবে বক্তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো বাদীপক্ষের চারজন নিরীহ শ্রমজীবী ব্যক্তিকে আটক করে। বক্তারা বলেন, আটককৃতরা ইট-বালি বহনকারী শ্রমিক ছিলেন, এবং তাঁদের এই ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাহিনীর পক্ষ নিয়ে নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
কিছু গণমাধ্যমে পুলিশ সূত্রে প্রকাশিত “চুরির মালামাল আজিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার” সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বক্তারা দাবি করেন। তাঁরা জানান, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে তাঁদের পরিবারের সুনাম নষ্ট করতে চক্রান্ত করছে।
বক্তারা আরও জানান, ঘটনার পর আলেয়া বেগম (৬৬) নামে একজন নারী পাল্টা মামলা দায়ের করেন, যাতে ১৩ জনের নামসহ আরও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দ্রুত চারজন নিরীহ শ্রমজীবীকে আটক করে কারাগারে পাঠায়।
এদিকে, গুলিবিদ্ধ আবদুল আজিজ বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন এবং একই ঘটনায় সিরাজুল সহ পরিবারের আরও ছয়জন সদস্য আহত হয়েছেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা এখনো এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আজিজ পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে একতরফা এবং পক্ষপাতমূলক ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে এবং প্রকৃত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণমাধ্যমের সহানুভূতি কামনা করা হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মূল দাবিসমূহ হলো:
১) প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি: গুলিবিদ্ধ আবদুল আজিজসহ অন্যান্য আহতদের ওপর হামলা চালানো সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
২) নিরীহদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি: নিরীহ শ্রমজীবী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৩) থানার ওসি’র পক্ষপাতমূলক আচরণের তদন্ত: খুলনা সদর থানার ওসি’র পক্ষ থেকে দেখা যাওয়া পক্ষপাতমূলক আচরণের একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪) পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের পুলিশি হয়রানি বন্ধ ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫) মিথ্যা সংবাদ প্রচারে ব্যবস্থা গ্রহণ: চুরি সংক্রান্ত ঘটনায় মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া, বক্তারা প্রশাসনের দ্রুত এবং নিরপেক্ষ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন। তাঁরা জানান, প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপ না হলে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি হতে পারে, যা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণ হবে।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।