অতনু চৌধুরী (রাজু) বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি// বাগেরহাটে চলতি মৌসুমে রোদের প্রভাব না থাকায় সময় মতো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের চারা ভালো হওয়ায় হিরা ২’চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বাগেরহাট জেলার কৃষক – কৃষানীরা। তবে মৌসুমের শুরুতেই মহামারি করোনার লকডাউন থাকায় দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলা থেকে বাগেরহাট জেলায় আসতে পারেনি দিনমজুর শ্রমিকরা। দ্বিগুণ টাকায় শ্রমিক মিললেও হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষক’কে। তবুও স্বপ্ন দেখেছেন এই বাগেরহাট জেলার কৃষকেরা। মাঘের শুরু থেকেই জমি তৈরি বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ ও জমিতে ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন এই বাগেরহাট জেলার কৃষকেরা। মাঘের শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সময় মতো জমিতে হাল দিয়ে জমি তৈরি করে প্রয়োজন মতো সার – বীজ বাজার থেকে ক্রয় করে এবার হিরা ২ ‘ ধানের চারা রোপণ করতে কোনো সমস্যা হয়নি।
ভোর হলেই কৃষকে’রা ছুটেছেন মাঠের দিকে। ভাটিয়ালী ও ভাওয়াইয়া গানের সুরে -সুরে মনের আনন্দে হিরা ২’ধান রোপণ করতে এমন দৃশ্যও চোখে পড়ে মাঠজুড়ে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট জেলার কৃষি অঞ্চলের প্রতিটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮৮ হাজার ৯১ হেক্টর জমিতে হিরা ২’ধানের চারা রোপণ করেছেন চাষিরা। এ বছর বীজতলার টার্গেট ছিল ৫ হাজার ৯৯০ হেক্টর। এছাড়া বাগেরহাট সদর, চিতলমারী, ফকিরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলায় হিরা ২ ও বি আর ২২ বেশি রোপণ করা হয়েছে। এই ৫’টি উপজেলায় গত বছর ১৮ হাজার ৯’শত হেক্টর জমিতে বিআর ২২, বিআর ২৩ ও স্থানীয় ধান ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর আবাদ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এই বছর রোগ – বালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় শত ভাগ ফসল চাষের লহ্ম্যে সফল হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
এ বিষয়ে কৃষক রনজন মৃদ্ধার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বছর করোনার কারণে সার ও বীজ উচ্চ মূল্যে ক্রয় করলেও ভালো ফলন পাব বলে আশাকরছি। তবে ৩৬০ টাকার বীজ ৬০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। শুধু বীজ নয় সব কিছু’র দাম বাড়তি থাকায় আমাদের এবার হিমশিম খেতে হয়েছে। সরকার যদি এই বছর আমাদের ধানের দাম বাড়তি দেয় তাহলে হয়তো আমরা লোকসান থেকে বেঁচে যাব।
এ বিষয়ে কৃষক হালিম শেখ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার শ্রমিক মজুরি বেশি দিতে হয়েছে। কারণ হিসেবে জানান করোনার জন্য অন্য জেলা বা উপজেলার শ্রমিক আসতে পারেনি। ৫’শত টাকার শ্রমিকে ৮’শত টাকা থেকে ১’হাজার টাকা দিতে হয়েছে। তাছাড়াও হালচাষও বেশি লাগছে। সব মিলিয়ে আমরা তেমন লাভবান হতে পারব না তবে মোংলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমাদের দিকে একটু সু- দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাহলে কিছুটা লোকসান থেকে মুক্তি পাব।
বাগেরহাট জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ – পরিচালক বলেন, লকডাউনের মধ্যেও হিরা ২’ ধানের ব্যপক ফলনের লহ্ম্যে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সেবা দিয়ে নিয়মিতভাবে কৃষকদের উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতি সুন্দর থাকায় এবার হিরা ২’ ফলনে সহ্মম হব। এবার মাঠ জুড়ে চড়ছে হিরা ২ রোপণের প্রতিযোগীতা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর জেলায় ধান চাষের নির্ধারিত লহ্ম্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে তিনি মনে করেন।
Leave a Reply