1. info@www.khulnarkhobor.com : khulnarkhobor :
সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com    বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৪৭,আপার যশোর রোড (সঙ্গীতা হোটেল ভবন) ,খুলনা-৯১০০।ফোন:০১৭১০-২৪০৭৮৫,০১৭২১-৪২৮১৩৫। মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
খুলনার খবর
খুলনার দিঘলিয়ায় কাঁচা রাস্তা পাকা করার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসীর আবেদন খুলনার সাবেক এমপি মঞ্জুসহ বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী খালাস নগরীর জোড়াগেটে কোরবানির পশুর হাটের উদ্বোধন ১ জুন অবিলম্বে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ কুরআন সুন্নাহ বিরোধী প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে সুন্দরবনের কান্না: জলবায়ু উদ্বাস্তুদের দেশে ঘরহারা লাখো মানুষের হাহাকার” ভারতে যাওয়ার সময় কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা বেনাপোলে – আটক  মাদক ব্যবসা,জমি দখল, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্মের হোতা দোলোয়ার;এলাকায় মানববন্ধন বিএনপি নেতার গাড়িবহরে হামলা-অগ্নিসংযোগ বিমান বন্দরে আটক নুসরাত ফারিয়া, সোমবার তোলা হবে আদালতে সাতক্ষীরা থেকে ফেরার পথে সাংবাদিক বহনকারী বাস খাদে, আহত ৩৫ নড়াইলে বিএনপি নেতাকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা, গ্রেফতার দু’জন খুলনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগ নেতা পেলেন জুলাই যোদ্ধা অনুদান খুলনায় কোরবানীর জন্য এক লাখ ৬৩ হাজার ৩১টি পশু প্রস্তুত খুলনায় সিটি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে হাত পাখা মেয়র প্রার্থী আব্দুল আউয়াল এর অভিযোগ পত্র দাখিল খুলনার খবর এর সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মোসা: চায়না খাতুন কুয়েটে এবার প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা – শিক্ষক সমিতির সকল অপরাধের বিচার করে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি – কুয়েট শিক্ষার্থীদের উপ – পরিচালকের দায়িত্ব পেয়ে ও ডাঃ সুজাত আহমেদ যোগদানে বাঁধা নগরীতে স্বস্তির বৃষ্টি কেশবপুরে মৎস্য ঘের স্থাপন নীতিমালা অমান্য করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা

সুন্দরবনের কান্না: জলবায়ু উদ্বাস্তুদের দেশে ঘরহারা লাখো মানুষের হাহাকার”

  • প্রকাশিত : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
  • ১০ বার শেয়ার হয়েছে

এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির ||সুন্দরবন থেকে ফিরে:বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের জলবায়ু পরিবর্তন মানে যে শুধু উষ্ণতা বৃদ্ধি তা নয়, এটি বাস্তুচ্যুত মানুষের আর্তনাদ, হারিয়ে যাওয়া গ্রাম আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের গল্প।

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটি জলবায়ু পরিবর্তন, যেখানে রয়েছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং মানবজীবনের প্রতিটি স্তরে অস্তিত্বের লড়াইয়ের এক কঠিন অধ্যায়। প্রতিনিয়ত গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি যে শুধু আমাদের পরিবেশকেই হুমকির মুখে ফেলছে তা নয় নাড়িয়ে দিচ্ছে সামাজিক কাঠামো ও অর্থনীতির ভিত্তি।

উপকূল ভাঙছে, ঘূর্ণিঝড় বাড়ছে, গ্রাম হারিয়ে যাচ্ছে—জলবায়ু উদ্বাস্তু সংকটে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না থাকায় রয়ে গেছে লাখো মানুষ অনিশ্চয়তার মুখে।
এই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বর্তমান বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাদের আমরা ‘জলবায়ু উদ্বাস্তু’ হিসেবে চিনি।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যেই এই সংকটের নির্মম বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করছে। উপকূলীয় অঞ্চলে নদীভাঙন, লবণাক্ততার বিস্তার এবং ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হাজার হাজার মানুষকে তাদের জন্মভূমি ছাড়তে বাধ্য করছে। তারা আশ্রয়ের সন্ধানে শহরমুখী হচ্ছে, যা নগরায়ণের ওপর তীব্র চাপ তৈরি করছে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক নতুন নতুন সংকটের জন্ম দিচ্ছে। আর এই তাদের চেনা পরিবেশ ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য মানুষদেরকেই মূলত “জলবায়ু উদ্বাস্তু” (Climate Refugee) বলা হয়।
এই ধারণাটি প্রথম প্রস্তাব করেন পরিবেশ বিজ্ঞানী লেস্টার ব্রাউন (১৯৭৬), যেখানে তিনি জলবায়ুগত বিপর্যয়ের ফলে বাস্তুচ্যুত হওয়া জনগোষ্ঠীর কথা তুলে ধরেন। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস, সুনামি, দাবানল কিংবা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষকে বাধ্য করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাড়ি জমাতে। এটি কখনো স্বল্পমেয়াদি হলেও, অনেক ক্ষেত্রে স্থায়ী অভিবাসনে রূপ নেয়।
আমাদের কাছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের মূলত তিনটি প্রধান রূপ স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। কেউ আকস্মিক দুর্যোগ যেমন সুনামি, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে “জরুরি পরিবেশগত উদ্বাস্তু” হয়ে যায়। কেউ দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত অবনতি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি বা কৃষিজমির উর্বরতা কমে যাওয়ায় “পরিবেশগতভাবে বাধ্য উদ্বাস্তু” হয়। আবার কেউ আগেভাগেই সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়, যাদের বলা হয় “পরিবেশগতভাবে উদ্বুদ্ধ উদ্বাস্তু”।

ক্রমশ বাড়তে থাকা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কৃষি উৎপাদনের পতন, নিরাপদ পানির অভাব এবং জলবায়ু উদ্বাস্তু সংকট আমাদের স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন “জলবায়ু নিরাপত্তা”—একটি সুসংগঠিত ব্যবস্থা, যা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যতকে জলবায়ুগত বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করবে।

জলবায়ু নিরাপত্তা মানে কেবল দুর্যোগ মোকাবিলা নয়; এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশল, যেখানে প্রতিরোধ (prevention), অভিযোজন (adaptation) ও প্রশমন (mitigation)—এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করা হয়।
জাতিসংঘের মতে, জলবায়ু নিরাপত্তা শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতি গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি খাদ্য নিরাপত্তা, পানিসম্পদের টেকসই ব্যবহার, মানবাধিকার এবং সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত।
এই জলবায়ু পরিবর্তন কেবল বৈজ্ঞানিক পরিসংখ্যানের বিষয় নয়, এটি লাখো মানুষের জীবনের গল্প—শেকড় হারানোর এক নির্মম বাস্তবতা। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় প্লাবন, নদীভাঙন ও দীর্ঘস্থায়ী খরা আমাদের পরিচিত ভূগোলকে ধীরে ধীরে বদলে দিচ্ছে।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামগুলো নিঃশব্দে ডুবে যাচ্ছে পানির নিচে, লবণাক্ততা কৃষিজমিকে অনুর্বর করে তুলছে, আর উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা খরার নিষ্ঠুর চক্রে আটকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত সিডর, আইলা, আম্পানের মতো ঘূর্ণিঝড় জনপদ ধ্বংস করছে, নদীগুলো গ্রাস করছে হাজার হাজার বসতি। পদ্মা, যমুনা আর মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে পরিবারগুলো এক মুহূর্তেই সর্বস্ব হারিয়ে ফেলছে। পাহাড়ি অঞ্চলেও ভূমিধসের মাত্রা বাড়ছে, আর বাস্তুচ্যুত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
এই উদ্বাস্তুদের গন্তব্য কোথায়? তারা শহরমুখী হতে বাধ্য হচ্ছে, যেখানে আগে থেকেই মানবসৃষ্ট সংকট তীব্র। ঢাকার মতো শহরগুলোর বস্তিতে ঠাঁই নেওয়া মানুষগুলো বাসস্থানের অনিশ্চয়তা, বিশুদ্ধ পানির অভাব, স্বাস্থ্যঝুঁকি আর দারিদ্র্যের চক্রে আটকে যাচ্ছে। জনসংখ্যার চাপ, নগর অবকাঠামোর ভঙ্গুরতা, চাকরির অভাব—সব মিলিয়ে এই বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী এক নতুন সংগ্রামের মুখোমুখি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তাগুলো এখন আর ভবিষ্যৎ অনুমান নয়, বরং বাস্তবতার প্রতিফলন।

১৯৮৮ সালে জডি জ্যাকসন পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সংখ্যা রাজনৈতিক উদ্বাস্তুদের তুলনায় ছয় গুণ বেশি হতে পারে। ১৯৯৭ সালে নরম্যান মেয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ২০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR) ২০০৯ সালে দেখিয়েছে, জলবায়ুগত বিপর্যয়ের কারণে ইতোমধ্যে ৩৬ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই সংকট থামাতে না পারলে হয়ত একদিন আমরাও উদ্বাস্তু হয়ে যাবো—পরিচিত ভূমি, শেকড়, সবকিছু পিছনে ফেলে নতুন এক অনিশ্চিত যাত্রায় নামতে বাধ্য হবো।
বর্তমান আন্তর্জাতিক উদ্বাস্তু আইন (জাতিসংঘ, ১৯৫১) রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত নিপীড়নের শিকার মানুষদের স্বীকৃতি দিলেও, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত লাখো মানুষের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক সুরক্ষা নেই। ১৯৬৭ সালের কনভেনশন যুদ্ধ ও সহিংসতার শিকার জনগোষ্ঠীকে উদ্বাস্তু হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুতদের এখনো আইনগত মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ফলে, জলবায়ু উদ্বাস্তুরা সবচেয়ে অনিরাপদ ও অনিশ্চিত বাস্তবতার মুখোমুখি।

আন্তর্জাতিক আইনের অভাবে, তারা আশ্রয়শিবির থেকেও উচ্ছেদের ঝুঁকিতে থাকে, যদিও তাদের জন্মভূমি হয়তো চিরতরে বিলীন হয়ে গেছে।

শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:-  ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।