খুলনার খবর ||রাজনীতির মাঠের আলোচনায় এবার ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল। দলীয় কোনো পদ-পদবি না পেলেও তামিমের বিএনপির দলীয় সমাবেশে যোগ দেওয়া নিয়ে চট্টগ্রাম তথা দেশের রাজনীতি অঙ্গনে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তারুণ্যে সমাবেশে যোগ দেওয়া ঘিরে চট্টগ্রামের দুটি আসন চট্টগ্রাম-৯ ও চট্টগ্রাম -১০ ঘিরে চলছে আলোচনা।
দলের ইঙ্গিত পেলেই হয়তো এ দুটি আসনের যে কোনো একটিতে বিএনপির হয়ে নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করতে পারে বলে আলোচনা চট্টগ্রামের তৃণমূলে।
যদিও তামিম কখনোই রাজনীতিতে ছিলেন না। এর আগে রাজনীতিতে নাম লিখেছিলেন দুই সতীর্থ মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং সাকিব আল হাসান।
তবে একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে তামিমের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ তাকে রাজনীতিতে জড়িয়ে সাকিব-মাশরাফির বর্তমান দুরবস্থার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
গত ১০ মে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের তিন সহযোগি সংগঠনের আয়োজনে (বিএনপি) ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’-এ যোগ দেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
সেখানে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মঞ্চের অগ্রভাগে ছিলেন তামিম। যদিও সমাবেশে নিজের বক্তব্যে রাজনৈতিক বিষয়াবলি সরাসরি এড়িয়ে গেছেন। দলের নেতারা উৎসাহ-উদ্দীপনায় বরণ করেন নেন।
বক্তব্যের শুরুতেই তামিম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছিলেন, ‘আমি পলিটিক্যাল কেউ না। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। তাই স্পোর্টস নিয়েই কথা বলব।’ এরপর তামিম গত ১৫ বছরে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের পিছিয়ে পড়ার কথা বলেন। তার ভাষায়, ‘একটা সময় সব খেলাতেই জাতীয় দলে চট্টগ্রামের ৬-৭ জন করে থাকত।
কিন্তু গত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম থেকে কষ্টেসৃষ্টে একজন কী দুজন সুযোগ পেয়েছেন। এমনটা কেন হয়েছে, তার জবাব খুঁজে বের করা জরুরি।’
তবে ভবিষ্যতে এই চিত্র বদলাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক এবং দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফের্য়াস কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু বলেন, বিএনপির সহযোগি তিন সংগঠনের আয়োজনে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ যোগ দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল।
তিনি একজন র্স্পোটসম্যান। এই সমাবেশে যোগদানের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।
বিএনপির সমাবেশে ‘স্পোর্টসম্যান’ হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা জানিয়ে তামিম ইকবাল গণমাধ্যমকে বলেন, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নয় বরং ‘স্পোর্টসম্যান’ হিসেবে তারুণ্যের সমাবেশে যোগদান করেছি। সমাবেশে আমি স্পোর্টস নিয়েই কথা বলেছি।
সমাবেশেই আমি অবস্থান পরিষ্কার করেছি। এটা নিয়ে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক পরিচালক সিরাজুদ্দীন মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, সমাবেশে যোগদানের রাতেই তামিমের সঙ্গে কথা হয়।
আলাপকালে বুঝেছি রাজনীতি নিয়ে তার মধ্যে আগ্রহ নেই। তার চিন্তাজুড়েই রয়েছে ক্রিকেট। ২০০৭ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব হয় ড্যাশিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের।
অভিষেকের পর থেকে আর পেছনে ফিরে থাকাতে হয়নি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই ক্রিকেটারকে।
তিনি বলেন, তামিম ইকবাল টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি ২০ মিলে ৩৯১ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৫ হাজার ২৪৯ রান করেন। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ২৫ সেঞ্চুরি এবং ৯৪ অর্ধশতক হাঁকান। ২০২৩ সালে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আগে শুনতাম তামিম ইকবাল বিএনপি পরিবাবের সন্তান।
তিনি সমাবেশে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে যেসব প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা চাই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হোন। তার মতো লোক রাজনীতিতে আসলে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন তথা দেশের ক্রীড়াঙ্গণে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সমাবেশে বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে তামিমের সক্রিয় হওয়ার কথা জানান কেউ কেউ।
যদিও বিএনপি কিংবা তামিম কেউ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি। তবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের রয়েছে ব্যক্তিগত সম্পর্ক।
২০১৩ সালের ২৭ জুন ঢাকার আর্মি গলফ ক্লাবের গলফ গার্ডেনে তামিম ইকবালের বিবাহোত্তর বউভাত অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে হাজির হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
Copyright © 2022 KhulnarKhobor.com মেইল:khulnarkhobor24@gmail.com।জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা আইনে তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধন আবেদিত।স্মারক নম্বর:- ০৫.৪৪.৪৭০০.০২২.১৮.২৪২.২২-১২১।এই নিউজ পোর্টালের কোন লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।